Altcoins Talks - Cryptocurrency Forum

Local => বাংলা (Bengali) => অর্থনীতি ও ক্রিপ্টোকারেন্সি => Topic started by: Rothi roy on March 30, 2021, 04:52:56 PM

Title: টাকা আছে শুধু কম্পিউটারে।
Post by: Rothi roy on March 30, 2021, 04:52:56 PM
জেরাল্ড কটেন, বছর তিরিশের নববিবাহিত কানাডিয়ান। গত ৮ ডিসেম্বর তাঁর স্ত্রী জেনিফারকে নিয়ে জয়পুরে এসে পৌঁছন। মধুচন্দ্রিমা যাপন ছাড়াও উদ্দেশ্য ছিল তেলঙ্গানার একটি গ্রামের অনাথ ছেলেমেয়েদের কাছে টেডি বিয়ার পৌঁছে দেওয়া। দুই উদ্দেশ্যের কোনওটা সফল হয়নি, কারণ জয়পুরে পৌঁছনোর চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে হোটেলের ঘর থেকে উদ্ধার হয় জেরাল্ডের মৃতদেহ। বিদেশি যুবকের মৃত্যুর খবর যতটুকু আলোড়ন তুলতে পারত, তার চেয়ে ঢের বেশি হইচই পড়ে গেল এই খবরে।

সঙ্গে সঙ্গেই নয়, জেরাল্ডের মৃত্যু আন্তর্জাতিক খবর হতে সময় নিল আরও দুটো মাস। ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে বিশ্বের প্রথম সারির প্রায় সব ক’টি সংবাদপত্রে জানা গেল, জেরাল্ডের মৃত্যুতে ক্ষতিগ্রস্ত শুধু তাঁর আত্মীয়-বন্ধুবান্ধব বা তেলঙ্গানার অনাথাশ্রমই হয়নি, হয়েছেন শ’য়ে শ’য়ে বিনিয়োগকারীও। এঁদের প্রত্যেকেই জেরাল্ডের ক্রিপটোকারেন্সি এক্সচেঞ্জ কোম্পানিতে বিনিয়োগ করেছিলেন। আমেরিকান ডলারে যার সর্বমোট মূল্য প্রায় সাড়ে উনিশ কোটি টাকা। এই পুরো টাকাটিই রাখা ছিল বিটকয়েন-এ, যার পাসওয়ার্ড জেরাল্ড আর কোনও ব্যক্তিকে জানিয়ে যাননি।

সে টাকা ফেরত পাওয়া যাবে কি না পরের প্রশ্ন— সবার আগে জানা দরকার সে টাকার বাস্তবে কোনও অস্তিত্ব আছে, নাকি বৈদ্যুতিন জগতের গোলকধাঁধায় সে টাকা হারিয়ে গিয়েছে চির দিনের মতো।

অলীক মুদ্রার নানা কথা
• কাকে বলে ক্রিপ্টোকারেন্সি?
কম্পিউটার বিজ্ঞানের বিশেষ শাখা ক্রিপ্টোলজি ব্যবহার করে যে বৈদ্যুতিন মুদ্রা তৈরি হয়, তারই নাম ক্রিপ্টোকারেন্সি। এই মুদ্রা হাতে ছোঁয়ার উপায় নেই, এর অস্তিত্ব শুধুমাত্র ভার্চুয়াল জগতে। ‘ব্লকচেন’ নামে এক প্রযুক্তি দুনিয়ার বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা কম্পিউটারে নিয়ন্ত্রণ করে এই অলীক মুদ্রা।
• বিটকয়েন কী?
প্রথম ক্রিপ্টোকারেন্সির নাম বিটকয়েন। সাতোশি নাকামোতো ২০০৯ সালে বিটকয়েনের প্রথম ব্লকটি তৈরি করেন। বিটকয়েন প্রথম বার বাণিজ্যিক ভাবে ব্যবহৃত হয় ২০১০ সালে।
• কী ভাবে ক্রিপ্টোকারেন্সির মালিক হওয়া যায়?
কোডিং-এ মারাত্মক দখল থাকলে ক্রিপ্টোকারেন্সি মাইনিং করা যেতে পারে। তবে, সাধারণ লোকের পক্ষে সেটা কঠিন। এ ছাড়াও নিজের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে বিটকয়েন এক্সচেঞ্জ থেকে কেনা যায় এই মুদ্রা। ব্যবহার করা যায় বিটকয়েন এক্সচেঞ্জ। কেনা সম্ভব পিয়ার-টু-পিয়ার ডাইরেক্টরি ব্যবহার করেও।
• ভারতে ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহার করা যায়?
২০১৮ সালে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক দেশের সব আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ক্রিপ্টোকারেন্সি লেনদেন নিষিদ্ধ করে।
রহস্য গুরুতর, সন্দেহ নেই। কিন্তু এ যুগের ফেলু মিত্তিরদের সে রহস্য সমাধান করতে হলে মগজাস্ত্র খাটানোর আগে হাতে তুলে নিতে হবে কম্পিউটার সায়েন্স বা ইনফরমেশন সিস্টেমের পাঠ্যপুস্তক। জানতে হবে, কাকে বলে ক্রিপটোকারেন্সি? বিটকয়েন-ই বা কী বস্তু?
ক্রিপটোকারেন্সি শব্দটির মধ্যে লুকিয়ে আছে আর একটি গুরুত্বপূর্ণ শব্দ ক্রিপটোগ্রাফি। দুই বা ততোধিক ব্যক্তির মধ্যে তথ্য আদানপ্রদানকে সুরক্ষিত করে তোলাই ক্রিপটোগ্রাফির লক্ষ্য। গণিতবিজ্ঞানের এই শাখাটি চর্চিত হচ্ছে প্রায় তিন থেকে চার হাজার বছর ধরে। কিন্তু এ কথা অনস্বীকার্য যে, কম্পিউটার আসার পরে সেই চর্চা হাজার গুণ বেড়েছে। এবং এই চর্চার রূপটি নেহাত বিমূর্ত নয়। প্রতি বার আপনি যখন এটিএম থেকে টাকা তুলছেন, ওয়েবসাইটে গিয়ে আপনার ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে জিনিসপত্র কেনাকাটি করছেন, ইমেল পাঠাচ্ছেন আপনার গুগল অ্যাকাউন্ট থেকে, ক্রিপটোগ্রাফির দৌলতেই আপনার টাকা বা তথ্য সুরক্ষিত থাকছে। অনলাইনে ঘুরতে থাকা হাজার হাজার ‘ইভল আই’ থেকে বাঁচার কবচ ওই ক্রিপটোগ্রাফিই।
আর এই ক্রিপটোগ্রাফি ব্যবহার করে যদি তৈরি করা যায় এক বিশেষ বৈদ্যুতিন মুদ্রা, যা ব্যবহার করে অতি সহজেই সেরে নেওয়া যাবে ব্যবসায়িক আদানপ্রদান, তাকে আর কী বলেই বা ডাকা যায়? হ্যাঁ, ক্রিপটোকারেন্সি। আর সর্বজনস্বীকৃত প্রথম ক্রিপটোকারেন্সির নাম বিটকয়েন— ‘কয়েন’ তো বুঝতেই পারছেন, আর ইনফরমেশনের ক্ষুদ্রতম এককটির নাম যে ‘বিট’।
কিন্তু ক্রিপটোকারেন্সির সঙ্গে শুধু ইনফরমেশন থিয়োরিই জড়িয়ে নেই, আছে এক চমকপ্রদ রাজনৈতিক ইতিহাসও। বিটকয়েনের জনকের কথাই ধরুন। নাম সাতোশি নাকামোতো। এটি একটি ছদ্মনাম। প্রায় দশ বছর ধরে বিশ্বের তাবড় কম্পিউটার বিজ্ঞানী এবং হ্যাকাররা রহস্যানুসন্ধানে ব্যস্ত থেকেও মুখোশের আড়ালের প্রতিভাবান মুখটিকে খুঁজে বার করতে পারেননি।
সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনের খুঁটিনাটি যাতে বারো ভূতের হাতে গিয়ে না পড়ে, তা নিশ্চিত করতেই এক দল সমমনস্ক বিজ্ঞানী, ইঞ্জিনিয়র, হ্যাকার মিলে নতুন নতুন আইডিয়া নিয়ে আলোচনা চালাতে থাকেন। আর এ রকমই নতুন এক আইডিয়া জানায়, যত দিন সরকারি টাঁকশালের টাকা মানুষের হাতে হাতে ঘুরতে থাকবে, ব্যক্তিগত জীবনের গোপনীয়তা সুরক্ষিত রাখা সম্ভব নয়। বিগ ব্রাদার যদি চায়, প্রতিটি নোটের আদানপ্রদানের ইতিহাস নথিবদ্ধ হওয়া শুধু সময়ের অপেক্ষা। এবং সেই ইতিহাস থেকে খুব সহজেই জেনে নেওয়া যায় একটি মানুষের দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপ। অতএব চাই এমন মুদ্রা যাতে সরকারের কোনও ভূমিকাই থাকবে না। সেখান থেকেই সরকারহীন মুদ্রার খোঁজ শুরু। বিটকয়েনে গিয়ে পৌঁছয় যে যাত্রা।
আজকের বিটকয়েন বা অন্য ক্রিপটোকারেন্সি যে পুরোপুরি স্বনির্ভর, সে কথা বলা যায় না। কারণ ডলার, পাউন্ড বা ভারতীয় টাকা খরচ করে বিটকয়েন কেনা যায় (আজকের হিসাবে এক বিটকয়েন কেনা যাবে প্রায় আট লক্ষ বাষট্টি টাকা খরচ করে!)। সুতরাং, দেশি বা বিদেশি সরকার যদি বিটকয়েন বেচাকেনার ওপর আইন চাপায়, তার প্রভাব বিটকয়েনের বাজারে পড়বেই। উল্টো দিকে অর্থনৈতিক বৃদ্ধি, মূল্যস্ফীতি বা রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের আর্থিক নীতির কোনও প্রভাবই নেই বিটকয়েনের বাজারে, কারণ কোনও কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক বিটকয়েন তৈরি করে না। বিটকয়েন তৈরি করছে লাখ লাখ কম্পিউটার, তবে আপনার আমার কম্পিউটারের চেয়ে ঢের শক্তিশালী সে সব মেশিন। প্রতিটি বিটকয়েন-নির্ভর ব্যবসায়িক আদানপ্রদান যে সব কম্পিউটার সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন করতে সাহায্য করছে, তারা পুরস্কার হিসাবে পাচ্ছে নতুন বিটকয়েন, যা আদতে একটি অতীব সুরক্ষিত কম্পিউটার ফাইলমাত্র। আর, যদি দুর্ভাগ্যক্রমে হারিয়ে যায় সে ফাইল? কম্পিউটার ফাইলের পাসওয়ার্ড যদি আর কেউ না জানে, তা হলে সে ফাইলও যে আর কোনও দিন কেউ ব্যবহার করতে পারবে না। ঠিক এমনটিই ঘটেছে জেরাল্ড কটেনের বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে।
বাজারে ভারসাম্য বজায় রাখার জন্যই বিটকয়েন বানানো হয়েছে এমন ভাবে যে, যত বেশি কম্পিউটার এক সঙ্গে গাণিতিক সমস্যার সমাধানের চেষ্টা চালাবে, ততই কঠিন হয়ে উঠবে সে সমাধান খুঁজে বার করা। পুঁজিপতিরা যাতে অনায়াসে বিটকয়েনের বাজার নিজেদের হাতে না নিয়ে নিতে পারেন, সেটা নিশ্চিত করার জন্যই এই ব্যবস্থা। কিন্তু উন্নত প্রযুক্তির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বিটকয়েন মাইনিং চালাতে গেলে যে পুঁজিটুকু নিতান্তই দরকার, তাও সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। তাই ছাপোষা আদমিদের বিটকয়েন নিয়ে সুখস্বপ্ন দেখতে গেলে প্রচলিত কায়দায় বিনিয়োগ ছাড়া উপায় নেই। অর্থাৎ টাকা-ডলার-পাউন্ড ভাঙিয়ে বিটকয়েন কিনে রাখা এবং আশা রাখা বিটকয়েনের মূল্য দিন দিন বাড়বে।
‘বিগ ব্রাদার’-এর হাত থেকে আধুনিক সমাজকে বাঁচানোর সময় নাকামোতো এবং তাঁর সহযোগীরা ভাবেননি, এক দিন পঞ্চাশ শতাংশ ক্রিপটোকারেন্সি ব্যবহার হবে ড্রাগ কেনাবেচা থেকে শুরু করে খুনির পারিশ্রমিক মেটানোর জন্য। আজ সেই সমস্যা ঘোর বাস্তব। উপরন্তু, জেরাল্ডের ঘটনা তৈরি করেছে নতুন বিতর্ক— কতটা গোপনীয়তা আমরা সত্যিই চাই? অদূর ভবিষ্যৎ-এ ক্রিপটোকারেন্সি বাজার থেকে উঠে যাবে না ঠিকই, কিন্তু যত দিন না ওপরের প্রশ্নগুলির উত্তর পাওয়া যাচ্ছে, গাঁধীছাপ নোট বা ভিসাকার্ডও পকেট থেকে হারিয়ে যাবে না।
সোর্স লিংক:https://www.anandabazar.com/science/a-detailed-report-on-bitcoin-the-cryptocurrency-which-gaining-popularity-1.1028170
Title: Re: টাকা আছে শুধু কম্পিউটারে।
Post by: HeartBit143 on March 30, 2021, 06:06:52 PM
প্রথমত জেরাল্ড কটেন এর মৃত্যুুতে আমি গভীর শোক প্রকাশ করছি এবং তার এক্সচেঞ্জ কোম্পানিতে যারা বিনিয়োগ করেছিলেন তাদের প্রতি আমার সমবেদনা রইলো।
  দ্বিতীয়ত আপনি আপনার পোস্ট এ যে সকল তথ্য তুলে ধরেছেন তা আমার মতো যারা নতুন আছে তাদের অনেক উপকারে আসবে। সবাই ক্রিপ্টোকারেন্সি এবং বিটকয়েন সম্পর্কে জানতে পারবে।                         
Title: Re: টাকা আছে শুধু কম্পিউটারে।
Post by: Jan on April 02, 2021, 06:16:31 AM
জেরাল্ড কটেন, বছর তিরিশের নববিবাহিত কানাডিয়ান। গত ৮ ডিসেম্বর তাঁর স্ত্রী জেনিফারকে নিয়ে জয়পুরে এসে পৌঁছন। মধুচন্দ্রিমা যাপন ছাড়াও উদ্দেশ্য ছিল তেলঙ্গানার একটি গ্রামের অনাথ ছেলেমেয়েদের কাছে টেডি বিয়ার পৌঁছে দেওয়া। দুই উদ্দেশ্যের কোনওটা সফল হয়নি, কারণ জয়পুরে পৌঁছনোর চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে হোটেলের ঘর থেকে উদ্ধার হয় জেরাল্ডের মৃতদেহ। বিদেশি যুবকের মৃত্যুর খবর যতটুকু আলোড়ন তুলতে পারত, তার চেয়ে ঢের বেশি হইচই পড়ে গেল এই খবরে।

সঙ্গে সঙ্গেই নয়, জেরাল্ডের মৃত্যু আন্তর্জাতিক খবর হতে সময় নিল আরও দুটো মাস। ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে বিশ্বের প্রথম সারির প্রায় সব ক’টি সংবাদপত্রে জানা গেল, জেরাল্ডের মৃত্যুতে ক্ষতিগ্রস্ত শুধু তাঁর আত্মীয়-বন্ধুবান্ধব বা তেলঙ্গানার অনাথাশ্রমই হয়নি, হয়েছেন শ’য়ে শ’য়ে বিনিয়োগকারীও। এঁদের প্রত্যেকেই জেরাল্ডের ক্রিপটোকারেন্সি এক্সচেঞ্জ কোম্পানিতে বিনিয়োগ করেছিলেন। আমেরিকান ডলারে যার সর্বমোট মূল্য প্রায় সাড়ে উনিশ কোটি টাকা। এই পুরো টাকাটিই রাখা ছিল বিটকয়েন-এ, যার পাসওয়ার্ড জেরাল্ড আর কোনও ব্যক্তিকে জানিয়ে যাননি।

সে টাকা ফেরত পাওয়া যাবে কি না পরের প্রশ্ন— সবার আগে জানা দরকার সে টাকার বাস্তবে কোনও অস্তিত্ব আছে, নাকি বৈদ্যুতিন জগতের গোলকধাঁধায় সে টাকা হারিয়ে গিয়েছে চির দিনের মতো।

অলীক মুদ্রার নানা কথা
• কাকে বলে ক্রিপ্টোকারেন্সি?
কম্পিউটার বিজ্ঞানের বিশেষ শাখা ক্রিপ্টোলজি ব্যবহার করে যে বৈদ্যুতিন মুদ্রা তৈরি হয়, তারই নাম ক্রিপ্টোকারেন্সি। এই মুদ্রা হাতে ছোঁয়ার উপায় নেই, এর অস্তিত্ব শুধুমাত্র ভার্চুয়াল জগতে। ‘ব্লকচেন’ নামে এক প্রযুক্তি দুনিয়ার বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা কম্পিউটারে নিয়ন্ত্রণ করে এই অলীক মুদ্রা।
• বিটকয়েন কী?
প্রথম ক্রিপ্টোকারেন্সির নাম বিটকয়েন। সাতোশি নাকামোতো ২০০৯ সালে বিটকয়েনের প্রথম ব্লকটি তৈরি করেন। বিটকয়েন প্রথম বার বাণিজ্যিক ভাবে ব্যবহৃত হয় ২০১০ সালে।
• কী ভাবে ক্রিপ্টোকারেন্সির মালিক হওয়া যায়?
কোডিং-এ মারাত্মক দখল থাকলে ক্রিপ্টোকারেন্সি মাইনিং করা যেতে পারে। তবে, সাধারণ লোকের পক্ষে সেটা কঠিন। এ ছাড়াও নিজের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে বিটকয়েন এক্সচেঞ্জ থেকে কেনা যায় এই মুদ্রা। ব্যবহার করা যায় বিটকয়েন এক্সচেঞ্জ। কেনা সম্ভব পিয়ার-টু-পিয়ার ডাইরেক্টরি ব্যবহার করেও।
• ভারতে ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহার করা যায়?
২০১৮ সালে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক দেশের সব আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ক্রিপ্টোকারেন্সি লেনদেন নিষিদ্ধ করে।
রহস্য গুরুতর, সন্দেহ নেই। কিন্তু এ যুগের ফেলু মিত্তিরদের সে রহস্য সমাধান করতে হলে মগজাস্ত্র খাটানোর আগে হাতে তুলে নিতে হবে কম্পিউটার সায়েন্স বা ইনফরমেশন সিস্টেমের পাঠ্যপুস্তক। জানতে হবে, কাকে বলে ক্রিপটোকারেন্সি? বিটকয়েন-ই বা কী বস্তু?
ক্রিপটোকারেন্সি শব্দটির মধ্যে লুকিয়ে আছে আর একটি গুরুত্বপূর্ণ শব্দ ক্রিপটোগ্রাফি। দুই বা ততোধিক ব্যক্তির মধ্যে তথ্য আদানপ্রদানকে সুরক্ষিত করে তোলাই ক্রিপটোগ্রাফির লক্ষ্য। গণিতবিজ্ঞানের এই শাখাটি চর্চিত হচ্ছে প্রায় তিন থেকে চার হাজার বছর ধরে। কিন্তু এ কথা অনস্বীকার্য যে, কম্পিউটার আসার পরে সেই চর্চা হাজার গুণ বেড়েছে। এবং এই চর্চার রূপটি নেহাত বিমূর্ত নয়। প্রতি বার আপনি যখন এটিএম থেকে টাকা তুলছেন, ওয়েবসাইটে গিয়ে আপনার ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে জিনিসপত্র কেনাকাটি করছেন, ইমেল পাঠাচ্ছেন আপনার গুগল অ্যাকাউন্ট থেকে, ক্রিপটোগ্রাফির দৌলতেই আপনার টাকা বা তথ্য সুরক্ষিত থাকছে। অনলাইনে ঘুরতে থাকা হাজার হাজার ‘ইভল আই’ থেকে বাঁচার কবচ ওই ক্রিপটোগ্রাফিই।
আর এই ক্রিপটোগ্রাফি ব্যবহার করে যদি তৈরি করা যায় এক বিশেষ বৈদ্যুতিন মুদ্রা, যা ব্যবহার করে অতি সহজেই সেরে নেওয়া যাবে ব্যবসায়িক আদানপ্রদান, তাকে আর কী বলেই বা ডাকা যায়? হ্যাঁ, ক্রিপটোকারেন্সি। আর সর্বজনস্বীকৃত প্রথম ক্রিপটোকারেন্সির নাম বিটকয়েন— ‘কয়েন’ তো বুঝতেই পারছেন, আর ইনফরমেশনের ক্ষুদ্রতম এককটির নাম যে ‘বিট’।
কিন্তু ক্রিপটোকারেন্সির সঙ্গে শুধু ইনফরমেশন থিয়োরিই জড়িয়ে নেই, আছে এক চমকপ্রদ রাজনৈতিক ইতিহাসও। বিটকয়েনের জনকের কথাই ধরুন। নাম সাতোশি নাকামোতো। এটি একটি ছদ্মনাম। প্রায় দশ বছর ধরে বিশ্বের তাবড় কম্পিউটার বিজ্ঞানী এবং হ্যাকাররা রহস্যানুসন্ধানে ব্যস্ত থেকেও মুখোশের আড়ালের প্রতিভাবান মুখটিকে খুঁজে বার করতে পারেননি।
সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনের খুঁটিনাটি যাতে বারো ভূতের হাতে গিয়ে না পড়ে, তা নিশ্চিত করতেই এক দল সমমনস্ক বিজ্ঞানী, ইঞ্জিনিয়র, হ্যাকার মিলে নতুন নতুন আইডিয়া নিয়ে আলোচনা চালাতে থাকেন। আর এ রকমই নতুন এক আইডিয়া জানায়, যত দিন সরকারি টাঁকশালের টাকা মানুষের হাতে হাতে ঘুরতে থাকবে, ব্যক্তিগত জীবনের গোপনীয়তা সুরক্ষিত রাখা সম্ভব নয়। বিগ ব্রাদার যদি চায়, প্রতিটি নোটের আদানপ্রদানের ইতিহাস নথিবদ্ধ হওয়া শুধু সময়ের অপেক্ষা। এবং সেই ইতিহাস থেকে খুব সহজেই জেনে নেওয়া যায় একটি মানুষের দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপ। অতএব চাই এমন মুদ্রা যাতে সরকারের কোনও ভূমিকাই থাকবে না। সেখান থেকেই সরকারহীন মুদ্রার খোঁজ শুরু। বিটকয়েনে গিয়ে পৌঁছয় যে যাত্রা।
আজকের বিটকয়েন বা অন্য ক্রিপটোকারেন্সি যে পুরোপুরি স্বনির্ভর, সে কথা বলা যায় না। কারণ ডলার, পাউন্ড বা ভারতীয় টাকা খরচ করে বিটকয়েন কেনা যায় (আজকের হিসাবে এক বিটকয়েন কেনা যাবে প্রায় আট লক্ষ বাষট্টি টাকা খরচ করে!)। সুতরাং, দেশি বা বিদেশি সরকার যদি বিটকয়েন বেচাকেনার ওপর আইন চাপায়, তার প্রভাব বিটকয়েনের বাজারে পড়বেই। উল্টো দিকে অর্থনৈতিক বৃদ্ধি, মূল্যস্ফীতি বা রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের আর্থিক নীতির কোনও প্রভাবই নেই বিটকয়েনের বাজারে, কারণ কোনও কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক বিটকয়েন তৈরি করে না। বিটকয়েন তৈরি করছে লাখ লাখ কম্পিউটার, তবে আপনার আমার কম্পিউটারের চেয়ে ঢের শক্তিশালী সে সব মেশিন। প্রতিটি বিটকয়েন-নির্ভর ব্যবসায়িক আদানপ্রদান যে সব কম্পিউটার সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন করতে সাহায্য করছে, তারা পুরস্কার হিসাবে পাচ্ছে নতুন বিটকয়েন, যা আদতে একটি অতীব সুরক্ষিত কম্পিউটার ফাইলমাত্র। আর, যদি দুর্ভাগ্যক্রমে হারিয়ে যায় সে ফাইল? কম্পিউটার ফাইলের পাসওয়ার্ড যদি আর কেউ না জানে, তা হলে সে ফাইলও যে আর কোনও দিন কেউ ব্যবহার করতে পারবে না। ঠিক এমনটিই ঘটেছে জেরাল্ড কটেনের বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে।
বাজারে ভারসাম্য বজায় রাখার জন্যই বিটকয়েন বানানো হয়েছে এমন ভাবে যে, যত বেশি কম্পিউটার এক সঙ্গে গাণিতিক সমস্যার সমাধানের চেষ্টা চালাবে, ততই কঠিন হয়ে উঠবে সে সমাধান খুঁজে বার করা। পুঁজিপতিরা যাতে অনায়াসে বিটকয়েনের বাজার নিজেদের হাতে না নিয়ে নিতে পারেন, সেটা নিশ্চিত করার জন্যই এই ব্যবস্থা। কিন্তু উন্নত প্রযুক্তির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বিটকয়েন মাইনিং চালাতে গেলে যে পুঁজিটুকু নিতান্তই দরকার, তাও সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। তাই ছাপোষা আদমিদের বিটকয়েন নিয়ে সুখস্বপ্ন দেখতে গেলে প্রচলিত কায়দায় বিনিয়োগ ছাড়া উপায় নেই। অর্থাৎ টাকা-ডলার-পাউন্ড ভাঙিয়ে বিটকয়েন কিনে রাখা এবং আশা রাখা বিটকয়েনের মূল্য দিন দিন বাড়বে।
‘বিগ ব্রাদার’-এর হাত থেকে আধুনিক সমাজকে বাঁচানোর সময় নাকামোতো এবং তাঁর সহযোগীরা ভাবেননি, এক দিন পঞ্চাশ শতাংশ ক্রিপটোকারেন্সি ব্যবহার হবে ড্রাগ কেনাবেচা থেকে শুরু করে খুনির পারিশ্রমিক মেটানোর জন্য। আজ সেই সমস্যা ঘোর বাস্তব। উপরন্তু, জেরাল্ডের ঘটনা তৈরি করেছে নতুন বিতর্ক— কতটা গোপনীয়তা আমরা সত্যিই চাই? অদূর ভবিষ্যৎ-এ ক্রিপটোকারেন্সি বাজার থেকে উঠে যাবে না ঠিকই, কিন্তু যত দিন না ওপরের প্রশ্নগুলির উত্তর পাওয়া যাচ্ছে, গাঁধীছাপ নোট বা ভিসাকার্ডও পকেট থেকে হারিয়ে যাবে না।
সোর্স লিংক:https://www.anandabazar.com/science/a-detailed-report-on-bitcoin-the-cryptocurrency-which-gaining-popularity-1.1028170
কেন যে এই বোকামি গুলো করে মানুষ কারণ হচ্ছে আপনি একটি বিষয় দেখবেন এতগুলো পরিমাণ বিটকয়েন ওই দেশের একটু হলেও অর্থনৈতিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটতো আর সে এমন কাজটি করে গেছে যে ওই বিটকয়েন গুলো একেবারেই নষ্ট হয়ে গেল আসলে কিছু পার্সোনাল জিনিস কিছু পার্সোনাল মানুষের সাথে শেয়ার করা উচিত বলে আমি মনে করি । যদি শেয়ার করত তাহলে এই ঘটনাটি ঘটতো না এবং এতগুলো বিনিয়োগকারীর ক্ষতি হত না ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি তথ্য তুলে ধরার জন্য ।
Title: Re: টাকা আছে শুধু কম্পিউটারে।
Post by: Irfan12@ on April 03, 2021, 08:21:18 PM
আসলে বিষয়টি খুবই সিকিউর। সেজন্য জেরাল্ড কাউকে তার কম্পিউটারের বিটকয়েন একাউন্ট এর পাসওয়ার্ড বলেননি বা কোথাও রেখে যায়নি। তবে সে যদি তার স্ত্রীকে তার অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ডটি বলে যেত তাহলে হয়তো ডলারগুলো আবারও পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হতো। তো এখন বলাই যায় যে জেরাল্ড এর সাথে সাথে সকল টাকা এখন কবরে চলে গেছে।
Title: Re: টাকা আছে শুধু কম্পিউটারে।
Post by: Dark Knight on April 04, 2021, 08:59:40 AM
আসলে বিষয়টি খুবই সিকিউর। সেজন্য জেরাল্ড কাউকে তার কম্পিউটারের বিটকয়েন একাউন্ট এর পাসওয়ার্ড বলেননি বা কোথাও রেখে যায়নি। তবে সে যদি তার স্ত্রীকে তার অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ডটি বলে যেত তাহলে হয়তো ডলারগুলো আবারও পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হতো। তো এখন বলাই যায় যে জেরাল্ড এর সাথে সাথে সকল টাকা এখন কবরে চলে গেছে।
ঠিক কথা বলেছেন আপনি। জেরাল্ড মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করছি। সে যদি তার অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ডটি কাউকে শেয়ার করে যেত তাহলে তার সম্পদ তথা ডলারগুলো পুনরুদ্ধার করা যেত। সেও যে কারো সাথে শেয়ার করে নি তার জন্য সেগুলো আর পুনরুদ্ধার করা সম্ভব নয়।
Title: Re: টাকা আছে শুধু কম্পিউটারে।
Post by: Goldlife on April 04, 2021, 11:34:54 AM
আপনার এই পোস্টটি পড়ে খুব ভালো লাগলো প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়লাম জানতে চাই যেটি বুঝতে পারবো আমি যে তার মৃত্যু যদি না আসো তাহলে কিন্তু তার উদ্দেশ্য সফল হতো তার মৃত্যুতে আমরা শোকাহত মর্মাহত এবং তার এক্সচেঞ্জ কোম্পানিতে বিনিয়োগ করেছিল তারা দের প্রতি রইল অনেক সহানুভূতি ধন্যবাদ আপনার এই পোস্টটি থেকে সবাই অনেক কিছু জানতে পারবেন আমি সবাইকে সাজেস্ট করব যে প্রশ্ন প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ে
Title: Re: টাকা আছে শুধু কম্পিউটারে।
Post by: Fulshai on March 26, 2022, 07:20:48 AM
হ্যাঁ আমিও একমত। কারণ জেরাল্ড যদি তার আপন লোকের কাছে কম্পিউটারের বিটকয়েন একাউন্ট এর পাসওয়ার্ড টা বলে যেত। তাহলে বর্তমান তার পরিবার-পরিজনরা অনেক উপকৃত হতো । আর পাশাপাশি যারা এই ফোরামে কাজ করছিল তারা অনেক উপকৃত হতো। কিন্তু তিনি কম্পিউটারের বিটকয়েন এর পাসওয়ার্ড গোপন রেখে মৃত্যুবরণ করেছেন। এজন্য আমরা সবাই তার মৃত্যুতে শোকাহত। কারণ তিনি ইহলোকে ভালো করতে পারেনি। আর পরলোকে অর্থ নিয়ে যেতে পারেনি।