বিটকয়েন-এর মূল আবিষ্কারক ক্রেগ স্টিভেন রাইট বিটকয়েনের আবিষ্কারক সাতোশি নাকামাতোর আসল পরিচয়। অস্ট্রেলিয়ান উদ্যোক্তা ক্রেগ স্টিভেন রাইট আসলে বিটকয়েনের জনক, যিনি সাতোশি নাকামাতোর নাম ধারণ করেছিলেন। তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট ম্যাশেবল জানিয়েছে এ খবর।
নিজের দাবির সমর্থনে ক্রেগ বিটকয়েনের শুরুর দিকের কিছু ক্রিপটোগ্রাফিক কি ব্যবহার করে ডিজিটালি সাইনিং বার্তা প্রদান করেন। অন্যদিকে বিটকয়েন কমিউনিটি এবং ডেভেলপমেন্ট টিমও স্বীকার করে নিয়েছে, ক্রেগই আসলে সাতোশি নাকামাতো।
বিবিসিকে দেওয়া এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে ক্রেগ বলেন, ‘আমি এটির কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলাম। তা ছাড়া আরো কিছু ব্যক্তি আমাকে সাহায্য করেছে।’
অন্যদিকে এই সাক্ষাৎকারের পর ক্রেগ এক ব্লগপোস্টে বিভিন্ন কারিগরি খুঁটিনাটি দিক তুলে ধরে প্রমাণ করেছেন, তিনিই সাতোশি। তা ছাড়া বিটকয়েন ফাউন্ডেশনের প্রধান বিজ্ঞানী গ্যাভিন অ্যান্ডারসেন ক্রেগের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে মত দিয়েছেন। তাঁর মতে, ক্রেগের দাবি সত্য।
ডিজিটাল সম্পদ কেনাবেচা ও লেনদেনের জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম বিটকয়েন। এর সূচনা পর্ব থেকেই প্রযুক্তি দুনিয়ায় সাতোশি নাকামাতো এক রহস্যের নাম। ২০০৮ সালে বিটকয়েন তৈরির পরপরই তার অধিকারে সর্বমোট বিটকয়েন ছিল প্রায় ১০ লাখ।
তবে এ রহস্য কিন্তু আগেও ফাঁস হয়েছিল। জনপ্রিয় ব্রিটিশ ম্যাগাজিন ওয়্যার্ড ও গিজমোডো তাদের এক প্রতিবেদনে দাবি করেছিল, ক্রেগ-ই বিটকয়েনের আবিষ্কর্তা। তবে পরে তারা জানায়, আসলে পুরো প্রতিবেদনই ধাপ্পাবাজি। তবে সে প্রতিবেদন প্রকাশের পর বেশ ঝামেলা পোহাতে হয়েছিল ক্রেগকে। অস্ট্রেলিয়ান সরকার ট্যাক্স ফাঁকির অভিযোগে তল্লাশি চালিয়েছিল তাঁর বাসা ও অফিসে।
তবে নিউজউইক এ ব্যাপারে অনুসন্ধান করতে গিয়ে এক ভুল ফলাফল সবার সামনে হাজির করে বসেছিল। ২০১৪ সালের মার্চে তারা দাবি করেছিল, কম্পিউটার বিজ্ঞানী ডোরিয়ান নাকামাতোই সাতোশি নাকামাতো।
কিন্তু এত দিন কেন চুপ করে ছিলেন ক্রেগ? এ প্রশ্ন অনেকের মনেই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে। তার উত্তর জানাচ্ছেন ক্রেগ নিজেই, ‘আমি কাজ করে যেতে চাই। আমি সেটাই করে যেতে ইচ্ছুক, যা আমি চাই। আমি কোনো অর্থ চাই না। আমি কোনো খ্যাতি চাই না। আমি কোনোরকম বন্দনা চাই না। আমি শুধু আমার একার মতো থাকতে চাই।’
টিভি সাক্ষাৎকারের শেষে ক্রেগ আরো জানিয়ে দেন, তিনি তাঁর কাজের জন্য কারো কাছ থেকে কোনো সম্মাননা, অর্থ কিংবা কোনো সাহায্য চান না। একই সঙ্গে তিনি জানিয়ে দেন, টিভি পর্দার কিংবা কোনো সংবাদমাধ্যমের সামনে এই তাঁর শেষ উপস্থিতি।
ক্রেগের দাবি অনেকে মেনে নিলেও এর বিরুদ্ধে সরব রয়েছেন অনেকে। অনেকের মতে, সাতোশি নাকামাতো আসলে একজন মানুষকে প্রতিনিধিত্ব করে না, বরং একটা দলের নাম বোঝায়। তবে আসলেই সময়ই বলে দেবে, কে বিটকয়েনের সত্যিকারের জনক।