বিটকয়েন কোন অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান বা নিয়ন্ত্রনকারী প্রতিষ্ঠান দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় না, কোন কেন্দ্রীয় ব্যাংকও এটির নিয়ন্ত্রন করে না বা নিয়ন্ত্রন করার প্রয়োজন পরে না।
বিটকয়েন ধারনাটি প্রথম ২০০৮ সালে ডিজিটাল কারেন্সী (পিয়ার টু পিয়ার মূদ্রা) হিসাবে অনলাইনে আর্বিভূত হয়।এবং ৯ জানুয়ারী ২০০৯ সালে এটি আত্নপ্রকাশ করে।
বিটকয়েনের আবিষ্কারক হলেন সাতোসি নাকামোতো। ১৯৭৫ সালের ৫ এপ্রিল সাতোসি নাকামোতোর জন্ম।তিনি একজন জাপানী নাগরিক।তিনি ক্রিপটোগ্রাফী, ডিজিটাল কারেন্সী এবং কম্পিউটার সাইন্স নিয়ে লেখাপড়া করেছেন।
বিটকয়েন একটি সুরক্ষিত সার্ভারের মাধ্যমে মাইনিং প্রকৃয়ায় উৎপন্ন এবং সংরক্ষিত হয়।প্রতি চার বৎসর অন্তর অন্তর উৎপাদিত বিটকয়েন অর্ধেকে নামিয়ে আনা হয় অথবা বিটকয়েনের সংখ্যা পুন:নির্ধারন করা হয় প্রচলিত মূদ্রার মানের সাথে সামঞ্জস্য রাখার জন্য এবং একটা নির্দ্দিষ্ট পরিমান বিটকয়েন তৈরী হয়ে গেলে আর কোন নতুন মাইনিং বা উৎপাদন করা হবে না।মজার ব্যাপার হলো, বিটকয়েন মাইনিং এর মাধ্যমে যে কেউ বিটকয়েন উৎপাদন করতে পারবে। বিটকয়েন উৎপাদনের প্রাথমিক ধাপ হলো সাতোসি উৎপাদন করা।১০,০০,০০,০০০(দশ কৌটি)সাতোসি = ১ বিটকয়েন।
বিটকয়েনের জনপ্রিয়তা এবং ব্যাবহার এতই দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে, যার সাথে পাল্লা দিয়ে অন্যকোন কারেন্সী দাড়াতে পারছে না। গত ২০১৬ সালের জানুয়ারী মাসে এক বিটকয়েনের মূল্য ছিলো ৪২০ ডলার তা এখন বেড়ে দাড়িয়েছে ৬,৫৮৮.৭৯ ডলারের মতো।এটি বর্তমানে স্বর্ণের চাইতেও দামী, বর্তমানে এক ভরি স্বর্ণের দাম ৪২,০০০টাকা (প্রায়)বাংলাদেশের বাজার মূল্য অনুযায়ী। বিশ্ব অর্থনীতিবিদগণ আশংকা করছেন, ২০১৮ সালের ডিসেম্বর নাগাদ এর মূল্য ৭,০০০ ডলারে উন্নিত হতে পারে। গুগলে btc to usd লিখে সার্চ দিলে প্রতিদিনকার আপডেট রেইট পাওয়া যাবে।বিটকয়েনের কোন নিয়ন্ত্রক না থাকায় এর ব্যাবহার আশংঙ্কাজনক ভাবে অর্থ-পাচারকারী, চোরাকারবারী এবং অবৈধ মাদক ব্যাবসায়ীদের মধ্যে দ্রুত প্রসার লাভ করছে।নিয়ন্ত্রনহীনতার কারনে, এটির মাঝে মাঝে মারাত্নকভাবে দরপতন ঘটে আবার দরের উর্ধ্বমূখী অবস্থান হয়ে যায়।মাঝে মাঝে আবার এটি দুষ্প্রাপ্যও হয়ে উঠে।
এসব কারনে বিটকয়েন আলোচিত এবং সমালোচিত বিশ্ব-অর্থনীতিতে। অতি সম্প্রতি কানাডা এবং আমেরিকা সরকার অর্থ-পাচারকারী, চোরাকারবারী এবং অবৈধ মাদক ব্যাবসায়ীদের নিয়ন্ত্রনের লক্ষ্যে, বিটকয়েন ব্যাবহারকারীদের নিবন্ধনের আওতায় আনার চিন্তা ভাবনা করছে।
কানাডায় বিশ্বের প্রথম বিটকয়েন এটিএম বুথ চালু করা হয়। বিটকয়েনের জনপ্রিয়তা দেখে, আরও কিছু কারেন্সী বাজারে আত্নপ্রকাশ করেছে। যেমন: ইথিরাম, সুইসকয়েন, লাইটকয়েন, ডগিকয়েন ইত্যাদি। তবে এগুলো মূল্যের দিক দিয়ে, বিটকয়েনের ধারে কাছেও ঘেষতে পারে নাই।